জীবনের লড়াইয়ে একা সেই জন্ম থেকে...
ক'দিন চাঁদের সোহাগ আদরে ভরে থাকে চারপাশ
এরপর সবকিছুতেই ভাটা
শুরু হয় হারজিৎ দৌড়
জোয়ারের আনন্দে উদ্বেলিত মাছদের যেমন
ভাটার সময় দৌড়াতেই হয় পেছনের দিকে-
এরপরও অনেকেই আটকা পড়ে, বালুচরে।
সবাই জন্মে না সোনার চামচ
আর দুধভাতে ভরা থালা সঙ্গে নিয়ে
যৌবনের দিনগুলো বড় রূঢ় হয়
আসমানে থাকে কপালপোড়া রোদ্দুর
নদীতে কুমির, ডাঙ্গায় শোষক সুশীল
যুদ্ধ তার থামে না এক জীবনে।
আমিও তাদের মত, যারা ভাগ্যহত
যারা শুধু দৌড়ে গেছে সেই দোলনা থেকে
কবর পর্যন্ত।
জীবনের দৌড়ে সবাই একা
প্রকৃতই একা, মাঝখানে কিছু সঙ্গী সাথী।
জন্মের আগের অন্ধকার ছোট্ট প্রকোষ্ঠ
মৃত্যুর পরের অনন্ত অন্ধকারের গহ্বর
এ দুইয়ে কী-বা পার্থক্য যদি বা হ্যামক না থাকে।
আগের সবাই দৌড়ে গেছে দিকচক্রবালের দিকে
আমি কীভাবে দৌড়াব পেছনের ঝোপঝাড়ের দিকে
আমার সহায় একমাত্র ভয়,
অকিঞ্চিকর জীবনে মহাভয়
গলায় দড়ি দিতে যেতে ভয়
অন্ধকারে প্রিয়তমেরে খুঁজতে যেতে ভয়
ঝড়-ঝঞ্ঝা বজ্রপাতে ভয়,
স্ত্রীসঙ্গ মৈথুনে ভয়
ভয়কেই সবচেয়ে বেশি ভয়
তবু সে পেছন ছাড়ে না আমার।
কত রকমের শিকল আমার পায়ে
জ্ঞানের-প্রেমের,
সংসারের ও কিয়া-পরকিয়া'র
সাহিত্য-দর্শনের,
মায়া-মাতৃত্বের
বন্ধু-বন্ধুত্বের
অতসব শিকল এগোতে দিচ্ছে না আমায়
অথচ দূরের দিগন্তে যে মেঘমালা
দিনের শেষে ওখানেই আমাকে পৌঁছতে হবে।
যাই যাই করি তবু যেতে পারি না,
শিকলাবদ্ধ থাকাই যেন প্রিয়তর হয়ে গেছে
অশান্তির চরম গরমে হাঁসফাঁস করছি
এরপরও শিকলটা ছিঁড়তে চাচ্ছি না
শিকলের সঙ্গেই বেধেছি প্রাণ প্রেমে ও বন্ধুত্বে।
বালিয়ার মোড়
১২-০৬-২২
Gazi Saiful Islam
Baliar Mor
Phulpur, Mymensigh.