Ads Area

মুশফিক বরাত’র তিনটি কবিতা

অজানা ক্ষোভ
.
রূপোলী আলোকে সোনালী ঝলকে
পৃথিবী পানে ধেয়ে আসবে ডাবল হেলিক্স নেবুলা;
সংযত হবে না কেটু পাহাড়ের দম্ভ
আর ভেঙে যাবে না চাটুকার নেতার লালায়িত স্বর্গ।
কোনো এক রূপোলী বিকেলে গান ছেড়ে
উচ্চাঙ্গ সংগীতের চর্চায় মশগুল হলেম সকলে-
আমি বলেছিলাম- আমার দৌড় ঐ নচিকেতা পর্যন্তই।
নিদ্রিতা বলেছিল- আমি শুধু শ্রেয়া ঘোষাল।
সবাই হেসেছিল; সজোরে সবাই হেসেছিল।
সভায় কথা উঠেছিল, একজন সাধুপুরুষ ক্ষমতায় বসলে
তারও সমালোচনা ক'রে ছেড়ে দেবে কি জনতা?
আমি মাওলানা ভাসানীর মতো বললাম, হয়তো তাই।
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধবে ব'লে।
নিদ্রিতা সাড়ে ছত্রিশের বুড়ো দেখেছো যে
তার হলুদ কোমর দুলিয়ে চলে আর বউ খোঁজে।
এমন মুহুর্তে আমি ভাবছিলাম চব্বিশের কথা
তোমার বয়স হয়েছিল তাও আমার জানা।
লোকে বলে, আঠারো বছর বয়স স্পর্ধায় নেয়
মাথা তোলবার ঝুঁকি আর বয়ে নিয়ে
আসে সফলতা।যেমন বিশ ডেকে আনে বিফলতা।
বাড়ে তেলের দাম, বাড়ে ডিজেলের মূল্য
জনতার সহিত ক্ষমতাসীন নেতার দূরত্বের খবর
একটা পান্ডাও রাখেনা।
যেমন মোদীর মার্বেল পাথরের মূর্তি
জনতা দড়ি লাগিয়ে টেনে নামাতে চায়।
ভণ্ড-চরিত্রহীন নেতার দম্ভ দিকে দিকে
ফাল্গুনের আহ্বান যখন অনেক অনেক দূরে-
শাদা ঘোড়ায় চেপে নন্দক তলোয়ার হাতে
দেবদত্ত ছুটিয়ে আসছেন তিনি- ক্যাসিনো রাজ
দিকে দিকে সমাজতন্ত্রের আহ্বানে।
১৩/০৫/২০২২

২.

নিদ্রিতাকে
.
শুক্লপক্ষের শেষ তিথিতে তোমার-আমার প্রেমের সূচনা
যেমন তুমি হারিয়ে যাবে চিরতরে
কোনো এক কৃষ্ণপক্ষে।
ব্রক্ষ্মদেব করেছিল আশির্বাদ যেমন-
ইন্দ্রদেব দিয়েছিল আসন্ন স্বর্গের পূর্বাভাস
স্বর্গের অপ্সরা সব নেচেছিল প্রথম জন্মে আমাদের তিথিতে
আমার পূর্বজন্মে তুমি ছিলে পদ্মফুল
আর আমি ছিলাম কৃষ্ণচূড়া।
তোমার জন্যে আমি হতে রাজি কিউপিড
ঘোষণা করতে রাজি এক দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের;
আমি রাজি মার্সের বরাত নিয়ে ক্ষত্রিয় বেশে
কোনো এক পলাশীর যুদ্ধ ডেকে আনতে।
হয়তো আমার সুন্দর ডানা দুটি ভেঙে
দিয়ে যাবে শত্রুপক্ষ।
তছনছ ক'রে দিয়ে যাবে সোনার কেল্লা।
তবুও
তীর-ধনুক হাতে প্রতিরোধ গড়ব আমি।
আত্মার শপথ-

কোনোভাবেই হারাতে দেব না সাইকিকে
কোনোভাবেই হারাতে দেব না আমার সাইকিকে।
মার্সের বর নিয়ে শপথ করেছিলাম যখন
আবারো দ্বিতীয় যুদ্ধের;
স্ট্যালিনের শক্ত দূর্গের চূড়া ভেদ করে
হেরে যাবো না দ্বিতীয়বার
যতোই দিক মানবপ্রজাতি লৌহমানবের খেতাব
আমি তখনো তোমারই।
কী কারুকার্যখচিত মসলিনে আবেসিত
ভালোবেসেছিলাম তোমাকে!!
হঠাৎ ভেসে আসে দূরে কোথাও দৈববাণী
----- হারানো বেহেশতি ডানা দুটি তুমি ফেরত পাবে আবারো।



৩.
নিদ্রিতার গতিময়তার কাছে
.
আমার আছে-
চিতাবাঘের মতো ক্ষীপ্রগতি
সেলফিশের মতো দানবীয়তা
আর বাজপাখির ন্যায় বায়বীয় দ্রুতময়তা
তোমার জন্যে ধূর্ত বাঘের সম্মুখ থেকে
ফিরে আসতে পারি।
ফিরে আসতে পারি ইভেন্ট হরাইজন থেকে,
এমনকি ভারত মহাসাগরের গভীর তলদেশ থেকেও।
আমাদের প্রেমের কাছে
মার্চিসন উল্কার আদিমতা পরাজয় বরণ করবে
ডেকে আনবে মধ্যযুগীয় বর্বরতা
যেখানে ছিল নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা
অবাধ আচরণ।
ধেয়ে আসবে প্রিয় শহর সমান উল্কাপিণ্ড;
রুখে দেবে হিমালয় পর্বত।
সেদিন প্রথম খবরে দেখলাম
একজন কৃষক একটা শুধুমাত্র একটা ধানগাছের জন্য
গভীর জলে ডুব দিয়েছিল।
আমিও কি?
পারবেন কি আমার পিতৃতুল্য পিতাও।
নবীদের রক্তাক্ত শরীর আর
মার্কসের ধূসর স্থবির দেহ
আমাকে ব্যথিত করে;
কমরেড লেনিনের অসম্ভব ক্ষীপ্রতা ও নিরাপদ পথচলা
আমাকে মুগ্ধ করে।
জনতার কাছে বারবার ছুটে যেতে উদ্বেলিত করে।
জানো নিদ্রিতা-
হরতালে শুধু একটা জিনিসই খুলতে দেখা যায়
সেটা এটিএম বুথ।তার মধ্যে একটি
তোমার-আমারও হতে পারতো।
যেমন হতে পারতো জান্নাতুল বাকির একটি সাজানো ফুলের উদ্যান
অবাধ বিচরণের
যেখানে সহসাই জলকেলী খেলেছে বেহেশতি হুরেরা;
পুষ্পমাখা হলদে রঙ মেখে।
----- ০২/০৬/২০২২

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ads Area