Ads Area

শম্ভু সরকার’র দুইটি কবিতা

 জলের টান

.

এ পথে নদী ছিল একদিন

ঐ দূর পাড়ে ভালোবাসা যাপনের খেয়া বাঁধা ছিল

মাঝি বউয়ের ভাতের থালা সাজানো মন কেমন করা অপেক্ষা ছিল

কাশফুল ঘেরা ছোট্ট কুটিরের ভেজা মাটির মেঝেতে জোৎস্নার লাগামছাড়া আনাগোনা ছিল

জোৎস্নার আদর মাখা একটা ঘুমন্ত শিশুও ছিল

হায়! আজ শুধু পড়ে আছে একটি অসমাপ্ত গল্পের দীর্ঘশ্বাস, না ফেরার আর্তনাদ

নদী এখন সুদীর্ঘ বালিরেখা

অথচ নদীকে নিবিড় ভাবে ভালোবেসে যে একদিন নিরুদ্দেশ হয়েছিল তার কোনো পদচিহ্ন 

আজ আর এখানে নেই

মাঝি বউ এখন বদ্ধউন্মাদ, আর শিশুটি ভবিষ্যৎ প্লাবনের স্বপ্ন বুকে আঁকড়ে একমনে নৌকা সাজিয়ে চলেছে।



২.

ধীবর

 . 

ছিপ ফেলে বসে আছে কানাই 

ফাতনাতে টান নেই, থেকে থেকে শুধু বুদবুদ উঠছে

বিরক্তি বাড়িয়ে পড়ন্ত বিকেলে ন্যাড়া হিজল গাছে উড়ে এলো একদল বক

কানাইকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একটি বক ছোঁ মেরে তুলে নিলো কাঙ্খিত রসদ

এই নিয়ে সতেরটি বিড়ি ফুঁকলো কানাই

ফাতনা তবুও নিশ্চল ও একগুঁয়ে

যতীন খুড়ো গাভী নিয়ে ফিরে গেছে ঘরে

গোধূলির সমস্ত অস্তিত্বকে উপেক্ষা করে কানাই বসে আছে খালি হাতে ফিরবে না বলেই

 শম্ভু সরকার
সেদিন ফাতনার মতো এমন একগুঁয়ে হতে পারলে

মালতীকে কেউ অন্য ঘরে তুলতে পারতো না

এসব ভাবতে ভাবতেই কানাই গভীর কালো জলে

বেঁচে থাকার একটা তাগিদ সন্ধান করে।



চাকদহ, নদীয়া

ভারত

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

Ads Area