Ads Area

অনন্য আমিনুল’র আঞ্চলিক ভাষার ছড়া


অনন্য আমিনুল


১.
কাম চুন্নি বউ
অনন্য আমিনুল
আইয়ে দ্যাখো নগরঘাটি
চিলকো নটির ভাও
ঢ্যাংঢ্যাঙা ঢ্যাং বেড়ায় ঘুরি
আও কইল্লে হয় ঘাও।
নাটের বেটি ট্যাপরা পেটি
চৈদ্দ ব্যালা খায়
খ্যার ছিঁড়ি না দুইখান করে
ফড়কি ব্যাড়ে যায়।
বিন্নি করি চুল বান্দিয়া
ওটোত মাখে অং
টাকাউ টাকাউ টারি টারি
দ্যাখেয়া বেড়ায় ঢং।
শ্বশুর ভাসুর কইলে কিছু
ঝ্যাংঝ্যাঙেয়া কয়
ঘর শান্টানি আন্ধা-বাড়া
অর দেহা না সয়।
হাকাউ হাসে গ্যাকগ্যাকেয়া,
ছাকাচ্ছাকার আও
ভাতাট্টা মুই হুতাশ থাকোঁ
কাথাত না পাও থাও।
রংপুর ও দিনাজপুরের আঞ্চলিক শব্দ: আইয়ে- এই যে; নগরঘাটি- যেখানে সেখানে ঘুড়ে বেড়ানো; চিলকো নটি- সামান্য রাগ সহ আদর মাখা গালি; ঢ্যাংঢ্যাঙা ঢ্যাং- কাজ-কাম ছাড়া ঘুড়ে বেড়ানো; আও-কথা; ঘাও- ঘা, নাটের বেটি-লাট সাহেবের মেয়ে; ট্যাপরা পেটি- ভূড়িঅলা; চৈদ্দ ব্যালা-১৪ বার; খ্যার- খড়; ফড়কি ব্যাড়া- কোন কথা না শুনে পাশ কাটা; ওটোত মাখে অং- ঠোঁটে রঙ লাগানো; টাকাউ টাকাউ-হন হন করে হাটা; টারি টারি-পাড়ায় পাড়ায়; ঝ্যাংঝ্যাঙেয়া- প্রচণ্ড রাগ করে বকাঝকা করা; শান্টানি- ঝাড়ু দেয়া; হাকাউ- এমনি এমনি; গ্যাকগ্যাকেয়া- জোড়ে সোড়ে; ছাকাচ্ছাকার আও- বড় বড় কথা বলা; ভাতাট্টা মুই-আমি স্বামী; কাথাত না পাও থাও- কথার জবাব দিতে না পারা।

২.

ঝলকি বানু
অনন্য আমিনুল
বেইচ্ছাগিনা টেনটেনিয়া
ঢাংগা নোহায় থামাইল
ভাতারগেনা টংটংগিয়া
শাহার বাড়ির কামাইল।
চাইট্টা ছাওয়া টেপুয়াপেটা
একটা ছাওয়া ঝিক
ঝিক ছাওয়াটাক ভোক নাগিলে
পাইলা মারে ফিক।
খায়না ছাওয়া পোন্থা পিঁয়াইজ
চাউল ভাজিয়া চায়
চাংগের ওপর চাউলের ডোগা
চাউল বা কোঠে পায়!
সিনজা খ্যারের ঘর বানেয়া
খোসলাখানোত শোতে
ঝলকি বানু চুয়ার পানি
নাই দেখে বাপগোতে।
চৌখা থাকি নিগায় পানি
কলসি ভরি ভরি
আন্দঘরোত চিকায় নাছে
গোদোর গোদোর করি।
ভাতারগেনা হুকা খায়া
খুকুর খাকার কাশে
বাপকালিয়া দুঃখ তাহো
গ্যাকগ্যাক করি হাসে।
(গ্যাকগ্যাক- শব্দ করে হাসাহাসি করা, বাপকালিয়া- পিতার আমলের,
গোদোর গোদোর- ছুচোর শব্দ,
বাপগোতে- বাপের গোত্রে,
খোসলাখানোত- খড়ের তৈরি এক প্রকার পাটির মধ্যে,
ডোগা- এক প্রকার মাটির হাড়ি বিশেষ,
টেপুয়াপেটা- হাড্ডিসার ও পেট বড়,
বেইচ্ছা- স্ত্রী লোক,
টেনটেনিয়া- শুকনা।)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ads Area