শোন প্রিয়সী,
বিয়ের পর তুমি আর আমি
কেউই মোবাইল ব্যবহার করবো না।
যখন আমরা খুনসুটি করবো কিংবা
বেলকনিতে বসে তোমার পছন্দের
শালিক দম্পত্তির প্রেমলীলা দেখে
সলজ্জে পরস্পর মুখ চাওয়াচাওয়ি করার পর
হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়বো
তখন আমাদের কারও হাতে মোবাইল থাকবে না।
আমরা যখন ঢেউয়ের তৃষ্ণায় মাতম করা
নদীর পাড়ে বসে তোমার আংটি পরা আঙুল
নাড়াচাড়া করতে করতে গল্প করবো
কিংবা
শুকনো বালির উপর পা মাড়িয়ে হাঁটতে হাঁটতে আমার হারিয়ে যাওয়া শৈশবের ঘটনা-
সাঁতরায়ে নদী পেরুনোর সময়
আমার লুঙি খুলে যাওয়ার গল্প শুনে
তুমি হাসতে হাসতে যে গড়াগড়ি খাবে
তখন আমাদের কারও হাতে মোবাইল থাকবে না
সারাদিনের ক্লান্তি শেষে রাতে
চোখাচোখি হয়ে শুয়ে তুমি যখন প্রতিবেশি ফুলবানু ও চন্দনের ছেলেমানুষি প্রেমের গল্প
শুনাতে শুনাতে হু হু করে হাসবে কিংবা
আমাদের আগত বাবুর পছন্দের নাম নিয়ে
দু'জন বচসা করতে করতে তুমি রাগ দেখাবে
তখন আমাদের কারও হাতে মোবাইল থাকবে না।
তোমার শুভ্র উদরে কানপেতে বাবুর হাসি শোনার জন্য পাগলামো করলে তুমি যখন
'দূর পাগল' বলে আমাকে বুকে টেনে নিবে
তখন আমাদের কারও হাতে মোবাইল থাকবে না
তুমি কি জানো?
মোবাইল মারাত্মক অপয়া!
এ একটা মোবাইলই-
দুজন অভিন্ন হৃদয়ের মানুষকে
মুখ ফিরিয়ে শুইতে বাধ্য করে।
দুজন অভিন্ন রুচির মানুষকে
ভিন্ন রাস্তায় হাঁটতে বাধ্য করে।
দুজন অভিন্ন মনের মানুষের
বুকের মাঝে প্রাচীর তৈরি করে।
দুজন অভিন্ন অন্তরের মানুষের
মাঝে ভিন্নতার দেয়াল সৃষ্টি করে।
আচ্ছা, তুমি তো জানো-
কেবল একটি মোবাইলই
ভালোবাসার সময়টুকু শুষে নেয়
ভালো লাগার স্মৃতিটুকু মুছে দেয়।
ভালোবাসার মানুষের সঙ্গদানে
মোবাইল প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে
আরক্তনয়ন ও রুক্ষ স্বরে
পরস্পর পরস্পরকে বলে;
তুমি কেন আমার মোবাইল ধরতে গেলে?
সেখান থেকে শুরু হয় দুটি মনের ভাঙন
ফাটল ধরে ভালোবাসার প্রাচীরে।
হ্যাঁ, আমাদের জীবনে
আমরা হৃদয় ভাঙনের যন্ত্র চাই না,
চাই না হাতের মোবাইল
অপয়া হয়ে আসুক
এবং ভালোবাসার বন্ধন ছিন্ন করুক।
ভালোবাসার অপয়া মোবাইল - মুহাম্মদ রমিজ উদ্দিন
এপ্রিল ১৯, ২০২২
0