১.
নারীর স্বর্গ
ভালোবাসার ছলে সৃষ্টির উল্লাসে
ফুটেছে দুটো টকটকে রঙিন ফুল
এ যে রক্তনাভির মূল।
মর্ত্যরে বুকে কর্তৃত্ব নিয়ে
মহাহুলুস্থুল!
রক্তভেদে না হলেও লিঙ্গভেদে শুরু
স্বর্গ বণ্টনে তার দৃষ্টান্ত পুরু।
এক লিঙ্গে কাড়াকাড়ি চার সতিনের দাবি
মর্ত্যে শুধু সেবাদাসী নারী।
মর্ত্যশাসক পুরুষ যদিও
স্বর্গশাসক পুরুষ
নয় তো কী?
লিঙ্গভেদে আবদ্ধ
মর্ত্যকারাগারে নারী।
স্বর্গের ঘরেও শুধু ছলচাতুরী।
মর্ত্যে যদিও সতিন সংখ্যা চার
স্বর্গের ঘরে চল্লিশ পার।
তবে স্বর্গে গিয়েও চুলোচুলি
লিঙ্গভেদে নারী?
২.
লাস্ট কিস
তোমার জন্য কবিতার শরীর জুড়ে
হরেকরকম উপহার,
উন্মুক্ত ঠোঁটে বিহঙ্গের মতো
লুফে নাও।
একেকটা শব্দ তোমাকে নিয়ে যাবে
অমৃতের দেশে।
কোথাও শুনতে পাবে
ঝিল্লিমুখর সন্ধ্যায় শ্যামাপোকার ডাক
কোথাও তিমির নিশিথে
সলিল মাঝে-
মন-পবনের হাওয়ায়
অপেক্ষারত নন্দন বনমধু।
রুপালি নাও ভাসিয়ে
গভীর যামে নওজোয়ান সেজে
শক্ত করে ধরো ভালোবাসার হাল।
কোথাও বাঁশির কপোত সুর
বেদনা ভারী করে দুঃখ যামিনি।
তুমি বুকের সন্নিকটে ঘন হয়ে বসে
অস্পষ্ট সৌরভের ছোঁয়া
ছড়িয়ে দিলে মাটির শরীর জুড়ে
শীতল হয়ে এল বিধ্বংসী লাবণ্যময় ঢেউ।
শুভ্র নেকাবে মোড়ানো
উষ্ণ ঠোঁটের শেষ ছোঁয়া
শবযাত্রীর মিছিলে মিছিলে।
৩.
মহাশিশু
হে মহাশিশু-
একফোঁটা জগতের
ধূলি-কাদা দিয়ে
গড়লে খেলার পুতুল।
আপন খেয়ালে
পুতুলের ঘুমচোখে
মেখে দিলে দর্পণের
চেতনকুল।
খেলার ছলে, সাগরের পেটে
ছিটালে মুক্তোদানা।
ক্ষণিক ভালোলাগার আবেশে
উচ্ছল ভ‚মিতে রোপণ করলে
আনন্দের রক্তবীজখানা।
শখের বশে আকাশের বুকে
এঁকে দিলে মেঘের আলপনা।
দুচোখের সিঞ্চিত জলে
ভেসে যায় সব ন্যায়-অন্যায়
অজানায়।
হে মহাশিশুÑ
ইচ্ছেমতো করছো খেলা
সকাল-দুপুর নেইকো বেলা।
যখন ইচ্ছে পুতুলটাকে
উলটেপুলটে মারছো লাথি।
ইচ্ছে হলে দিচ্ছ ভেঙে
বরফগলা পাহাড়টাকে।
আবার দোষের বোঝা ঘাড়ে চাপিয়ে
চাবুক দিয়ে মারছ কষে,
ছলের পর ছল করে
আচার-বিচার করছো
তালুকদার লাভলী |
হে মহাশিশু!
তালুকদার লাভলী
কবি ও কথা সাগিত্যিক
যুগ্ন সম্পাদক( আন্তর্জাতিক পেন বাংলাদেশ )